|| ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ২০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
একজন সত্যান্বেষী মানুষ ছিলেন মাও: আজগর আহমদ – দৈনিক বাংলার অধিকার
প্রকাশের তারিখঃ ১ জুলাই, ২০২০
.......সাইফুল ইসলাম সুমন.....
চলে গেলেন কচুয়া উপজেলার ঐতিহ্যবাহী মেঘদাইর তাহেরীয়া ফাজিল মাদ্রাসার সাবেক সহকারী অধ্যাপক, কামাল্লা দরবার শরীফের প্রধান খলিফা, প্রখ্যাত আলেম দ্বীন, ওস্তাজুল আছাতিজা, হযরত মাওলানা আজগর আহমদ (মা.জি.আ:)। কচুয়া তথা কুমিল্লা অঞ্চলের আলেম সমাজের মধ্যমণি রোববার দিবাগত রাতে ইন্তেকাল করেছেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন) একজন সদালাপী, মিষ্টভাষী, বিজ্ঞ আলেম ছিলেন হযরত মাওলানা আজগর আহমদ। আমি আমার কাছ থেকে যতটুকু দেখেছি, তিনি একজন সত্যান্বেষী মানুষ ছিলেন। হকের ওপর ছিলেন অটল ও অবিচল। বাড়ির পাশে মাদ্রাসা থাকায়, যখনই মাদ্রাসায় যেতাম তিনাকে দেখতাম টেবিলের উপর কিতাব রেখে বসে বসে পড়ছে। বিনা প্রয়োজনে কারো সাথে কথা বলতে দেখিনি। সব সময় শান্ত চিষ্ট থাকতেন। কেউ কোন কিছু জানতে চাইলে, অতি সহজে খুব সুন্দর করে বুঝিয়ে দিতেন। পরবর্তীতে এ সম্পর্কে আর কোন প্রশ্ন থাকত না। তিনি ক্লাসে আমাদেরকে এমন ভাবে কিতাবগুলো এত সুন্দর ও সাবলীল ভাষায় পড়াতেন পরবর্তীতে আমাদের সে বিষয়ে কোন জটিলতা থাকত না। ২০১৮ সালে মাদ্রাসা থেকে হুজুরের বিদায়ের পর মাদ্রাসায় যেন একটি শূন্যতা বিরাজ করছিল। তাঁর চিন্তা-চেতনা কোন স্রোতে গা ভাসিয়ে দেওয়ার মত নয়। তাঁর চিন্তা-চেতনা ছিল অনেক গভীর। সারাক্ষণ কোরআন-হাদিস রিচার্জ করার প্রতি ন্যস্ত থাকতেন তিনি। মাওলানা আজগর আহমদ কচুয়াসহ কুমিল্লা অঞ্চলের মাঝে তাঁর খ্যাতি ছিল। বিশেষ করে মেঘদাইর তাহেরীয়া ফাজিল মাদ্রাসার একজন কর্ণধার ছিলেন। বহু আলেম গড়ার কারিগর ছিলেন তিনি। মেঘদাইর তাহেরীয়া ফাজিল মাদ্রাসায় মাওলানা আজগর আহমদ এর বহু অবদান। কচুয়ার শীর্ষ আলেম হিসেবে তিনি বহু অবদান রেখেছিলেন। মাওলানা আজগর আহমদ একজন প্রসিদ্ধ বক্তাও ছিলেন। বয়ানের সময় তাঁর সুমধুর কণ্ঠস্বর বেজে উঠত। সাধারণ কোন তেলাওয়াত নয়, এক অনন্য বৈশিষ্ট্য ছিল তাঁর তেলাওয়াতের মধ্যে। নিজস্ব সুর ভঙ্গিমার তেলাওয়াত স্রোতাদের পাগল করে দিত। তাঁর জীবনের অধিকাংশ সময় মেঘদাইর গ্রামের মানুষের সাথে কাটিয়েছেন। তিনি মেঘদাইর কেন্দ্রীয় ঈদগাহের ইমামও ছিলেন। আমাদের গ্রামের সকল মানুষ তাকে অত্যন্ত শ্রদ্ধা ও ভক্তি করত। এমন একজন মহৎ মানুষের বিদায়ে মেঘদাইর তথা কচুয়া উপজেলা যেন স্তম্ভিত হয়ে পড়েছে। চলে গেলেন তিনি আমাদের ছেড়ে। এই স্থান পূরণ হবার নয়। বড় ক্ষতি হলো এ জাতির। কায়মনো বাক্যে মহান আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ করি, আল্লাহ তায়ালা তাঁকে জান্নাতের সু-উচ্চ মাক্বাম দান করেন। আমিন।
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.