|| ২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ২৩শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
ঠাকুরগাঁওয়ে বেড়েছে খাল-বিল ও নদ-নদীর পানি,বাঁজারে বিক্রি হচ্ছে মাছ ধরার যন্ত্রপাতী- দৈনিক বাংলার অধিকার
প্রকাশের তারিখঃ ২৬ জুন, ২০২০
মোঃ ইলিয়াস আলী, নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ঠাকুরগাঁও জেলার টাঙ্গন নদী ও বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার তীরনই ও কুলিক নদীসহ খাল-বিলে বেড়েছে পানি। নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে নদ-নদীর অববাহিকা, খাল-বিল ও চরাঞ্চলের জলাশয়গুলোতে বর্ষার নতুন পানি প্রবেশ করছে। পানি বৃদ্ধির এই মৌসুমে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মাছ ধরার যন্ত্রপাতী বিক্রি । নদী-খাল-বিল সহ বর্ষার পানি প্রবেশ করে এমন সব এলাকার লোকজন বর্ষার এই সময় টায় ব্যস্ত থাকে মাছ ধরা নিয়ে। আর মাছ ধরার অন্যতম এই যন্ত্রপাতী বিক্রিও বেড়ে যায় এ মৌসুমে। ২৬ জুন শুক্রবার সকালে লাহিড়ী হাটে, ঘুরে দেখা গেছে মাছ ধরার যন্ত্রপাতী হিসেবে তৈরি পৌলাও, ডিহর, ভলং, ঘূর্ণি ও চাই বিক্রি হচ্ছে প্রচুর পরিমাণে। দূর-দূরান্ত থেকে ক্রেতারা এসে মাছ ধরার পৌলাও, ডিহর, ঘুর্ণি,চাঁই কিনছেন। ক্রেতারা জানান, বাড়ির আশেপাশের জলাশয়ে বর্ষার নতুন পানি এসেছে। এসময় নদীর মাছও প্রবেশ করে খাল-বিলসহ জলাশয়ে। মাছ ধরার জন্য বাঁশের তৈরি এসব ডিহর,পৌলাও, ঘুর্ণি দিয়ে সহজেই মাছ ধরা যায়। বছরের এই সময়টা মাছ ধরার কারণে এ যন্ত্রপাতীগুলো বেশি কেনা-বেচা হয়। এই মৌসুমে কেনা একেকটি বাঁশের মাছ ধরার যন্ত্রপাতীগুলো প্রায় এক বছর পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়। ঠাকুরগাঁও জেলার সদর উপজেলার থেকে আসা সলেমান আলী বলেন, গত বছর বর্ষার সময় কিনেছিলাম। এক বছরে প্রায় ভেঙে গেছে। তাই আবার নতুন ডিহর কিনলাম। বাড়ির আশেপাশের জলাশয়ে পানি এসেছে। ডিহর পেতে রাখলে মাছ ধরা পড়েই। বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার কাশিডাঙ্গা গ্রামের শাহীন নামে এক জেলে বলেন, পেশায় মাছ শিকারি আমরা। নদী সংলগ্ন খালগুলোতে নতুন পানি এসেছে। খালের পাশ দিয়ে সারিবদ্ধ ভাবে ডিহর ও ভলং পেতে এ মৌসুমে মাছ ধরা হয়। তাই নতুন ডিহর ও ভলং কিনলাম। বিক্রেতাদের সঙ্গে আলাপ করলে তারা জানান, বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকেই মাছ ধরার যন্ত্রপাতী বিক্রি বেশি হয়। বাঁশ দিয়ে তৈরি নানা ধরনের যন্ত্রপাতী তৈরি করে হাট-বাজারে বিক্রি করা হয়। মাছ ধরার যন্ত্রপাতীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় ডিহর। প্রতি পিচ ডিহর বর্তমানে ৫শ টাকা করে বিক্রি হয়। বিক্রেতারা আরো জানান, বাঁশের দাম বাড়ায় মাছ ধরার যন্ত্রপাতীর দামও বেড়েছে। গতবারে এই ডিহর ৪শ করে বিক্রি করা হয়েছে। এ বছর ৫শ এর নিচে বিক্রি করলে লাভ হয় না। হাট গুলোতে ঘুরে ঘুরে দেখা গেছে, নেকমরদ সাপ্তাহিক হাটে সকাল থেকেই মাছ ধরার এসব যন্ত্রপাতী বিক্রি হতে থাকে চলে বিকাল ৫টা পর্যন্ত। প্রতি হাটে শতাধিক মাছের যন্ত্রপাতী বিক্রি হয়। নদীর তীরবর্তী অঞ্চলসহ চরাঞ্চল ও বিল এলাকার মানুষ চাহিদা অনুযায়ী এসব যন্ত্রপাতী কিনছে। কেউ কেউ ১০/২০ টা করে মাছ ধরার ডিহর, ঘুর্ণি ও ভলং কিনছে। ক্রেতাদের বেশির ভাগই পেশায় মাছ শিকারি। তবে শৌখিন মাছ শিকারিরাও বর্ষার সময় মাছ ধরার জন্য এই যন্ত্রপাতী কিনে থাকে। ঠাকুরগাঁও জেলার টাঙ্গন নদীতে বাড়তে শুরু করেছে পানি। আশেপাশে গ্রাম গুলোতে তলিয়ে যেতে শুরু করেছে। সেসঙ্গে নিম্নাঞ্চল এলাকাতেও প্রবেশ করছে বর্ষার পানি। এসময় নদীর পাড়, চরাঞ্চলের ফসলের ক্ষেত, খালের মধ্যে বাঁশের তৈরি মাছ ধরার এসব যন্ত্রপাতী পেতে মাছ শিকার করতে দেখা যায়। পেশাদার মৎস্য শিকারিদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও তাদের দৈনন্দিন চাহিদা মেটানোর জন্য যন্ত্রপাতী পেতে মাছ ধরে থাকে। ফলে এই সময়টায় স্থানীয় হাট-বাজারগুলোতে মাছ ধরার যন্ত্রপাতী প্রচুর পরিমানে বিক্রি হয়। এই শিল্পের সঙ্গে জড়িতদের কদরও বাড়ে এই মৌসুমে।
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.