|| ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ২০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
আজ বলয়গ্রাস সূর্যগ্রহণ ও বলয়গ্রাস সূর্যগ্রহণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন- দৈনিক বাংলার অধিকার
প্রকাশের তারিখঃ ২১ জুন, ২০২০
আজ বলয়গ্রাস সূর্যগ্রহণ। পৃথিবী থেকে সূর্যকে দেখাবে একটা গোলাকার রিং বা আংটির মতো। জানা গিয়েছে, আজ এই গ্রহণ এত দীর্ঘ সময় ধরে হতে চলেছে যা গত ১০০ বছরে দেখা যায়নি। সেইসঙ্গে এই গ্রহণের সময় যে বৃত্তাকার রিং তৈরি হবে তার মাত্রা দেখে একে শতাব্দীর গভীরতম সূর্যগ্রহণ বলছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।
জানা গিয়েছে, আজ ভারতে সকাল সাড়ে ১০টার পর থেকে এই গ্রহণ শুরু হবে। বিভিন্ন জায়গায় সময়ের কিছুটা হেরফের রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের তরফে জানানো হয়েছে, কলকাতায় সকাল ১০টা ৪৬ মিনিটে শুরু হবে এই গ্রহণ। চলবে দুপুর ২টো ১৭ মিনিট পর্যন্ত। বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ হবে বলয়গ্রাস। প্রায় ৩৮ সেকেন্ড ধরে এই বলয়গ্রাস চলবে। এই কারণেই বলা হচ্ছে, গত ১০০ বছরে এই ধরনের গ্রহণ দেখা যায়নি। কারণ এতক্ষণ ধরে সাধারণত গ্রহণ চলে না। কয়েক মিনিটের মধ্যেই সূর্য ফের বেরিয়ে পড়ে।
জানা গিয়েছে, এশিয়া, আফ্রিকা, দক্ষিণ ও পূর্ব ইউরোপ, উত্তর অস্ট্রেলিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরের কিছু অংশ থেকে এই সূর্যগ্রহণ স্পষ্ট দেখা যাবে। ভারতে উত্তরাখণ্ডের একটি বিশেষ এলাকা থেকেই এই বলয়গ্রাস দেখা যাবে। দেশের বাকি এলাকা থেকে অবশ্য আংশিক সূর্যগ্রহণই দেখা যাবে বলে জানাচ্ছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।
এই মহাজাগতিক দৃশ্যের জন্য অধির আগ্রহে অপেক্ষা করছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। করোনা আবহে এই গ্রহণ নতুন কোনও বার্তা আনে কিনা সেদিকেই নজর দেওয়া হচ্ছে।
কিন্তু কী এই বলয়গ্রাস সূর্যগ্রহণ? তার আগে জানতে হবে সূর্যগ্রহণ ঠিক কী?
সূর্যের চারদিকে পৃথিবী প্রদক্ষিণ করে। আবার পৃথিবীর চারদিকে প্রদক্ষিণ করে চাঁদ। এভাবে প্রদক্ষিণ করতে করতে যখন সূর্য, পৃথিবী ও চাঁদ একই সরলরেখায় আসে, তখন গ্রহণ হয়। যখন চাঁদ, পৃথিবী ও সূর্যের মধ্যে একই সরলরেখায় চলে আসে, তখন সূর্যের আলো পৃথিবীতে আসার সময় চাঁদের দ্বারা বাধা পায়। ফলে সূর্যের আলো কিছুক্ষণের জন্য পৃথিবীতে আসতে পারে না। এই সময়কে সূর্যগ্রহণ বলে।
এই সূর্যগ্রহণ আবার তিন ধরনের হয়ে থাকে। আংশিক সূর্যগ্রহণ, পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ ও বলয়গ্রাস সূর্যগ্রহণ।
আংশিক সূর্যগ্রহণ: এই ধরনের সূর্যগ্রহণ তখন দেখা যায়, যখন চাঁদের মাধ্যমে সূর্যের আলো পৃথিবীতে আসতে বাধা পেলেও একটা অংশের আলোয় শুধুমাত্র বাধা পায়। অর্থাৎ সূর্যের একটা অংশেই চাঁদের জন্য ঢাকা পড়ে। বাকি অংশ দেখা যায়। এই আংশিক গ্রহণে সূর্যকে আধ খাওয়া ফলের মতো দেখতে লাগে।
পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ: এই ধরনের সূর্যগ্রহণ তখনই সম্ভব যখন সূর্য, পৃথিবী ও চাঁদ সম্পূর্ণভাবে একই সরলরেখায় আসে। সেক্ষেত্রে সূর্যের আলো চাঁদের দ্বারা পুরোপুরি বাধা পায়। ফলে কিছুক্ষণের জন্য সূর্যের আলো দেখতেই পাওয়া যায় না। গোটা পৃথিবীতে যেন অন্ধকার নেমে আসে। একেই পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ বলে।
বলয়গ্রাস সূর্যগ্রহণ: এই ধরনের সূর্যগ্রহণ তখন দেখা যায়, যখন সূর্যের বহিঃসীমা অঞ্চল ছাড়া বাকি অংশ চাঁদের দ্বারা ঢেকে যায়। অর্থাৎ পৃথিবী থেকে সূর্যের শুধু বহিঃসীমাকে দেখা যায়। দেখে মনে হয়, ঠিক যেন একটা আংটি। একে আগুনের বলয়ও বলা হয়ে থাকে। এই ধরনের সূর্যগ্রহণ সবথেকে কম দেখা যায়। কারণ এই গ্রহণের জন্য পৃথিবী ও সূর্যের সঙ্গে চাঁদের দূরত্ব নির্দিষ্ট হওয়া প্রয়োজন।
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.