|| ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ২০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
কেন্দুয়া থানার ওসি রাশেদুজ্জামানের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনঃ দৈনিক বাংলার অধিকার
প্রকাশের তারিখঃ ১৬ জুন, ২০২০
কেন্দুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ রাশেদুজ্জামানের বিরুদ্ধে এসএসসি পরীক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনায় মামলা না নেয়ার অভিযোগ করেছে ধর্ষিতার স্বজনরা। কেন্দুয়া উপজেলার পাড়াতলী গ্রামের ধর্ষিতার ভাই কামরুল ইসলাম সোমবার দুপুরে নেত্রকোনা জেলা প্রেসক্লাবে এক আনুষ্ঠানিক সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে থানার ওসির বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলে ধরেন। এ সময় নেত্রকোনা জেলায় কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন। ভিকটিমের ভাই কামরুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারী কেন্দুয়া পৌরসভার শান্তিনগর এলাকার সোহরাব মাস্টারের বাড়িতে আমার বোনকে একই উপজেলার ছিলিমপুর গ্রামের প্রভাবশালী মুকুল খানের ছেলে প্রিন্স খান বাবু ধর্ষণ করে। এ সময় খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ধর্ষক প্রিন্স বাবু ও ধর্ষিত আমার বোনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। পরে ঘটনার পর দিন ৩০ জানুয়ারী আমি ধর্ষকের বিরুদ্ধে আমার বোনকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষনের অভিযোগ এনে থানায় মামলা করতে চাইলে ঘটনাটি ওসি সাহেব প্রথমে পজেটিভ ভাবে গ্রহণ করলেও পরে অজ্ঞাত কারণে আমাকে থানার একটি কক্ষে ১৪ ঘটনা আটকে রাখার পর আমাকে ওসি সাহেব হুমকি দিয়ে বলেন, এ বিষয়ে মামলা করলে আমাকে ও আমার বোনকে মিথ্যা মামলা দিয়ে কোর্টে চালান করে দিবে। এছাড়াও ওসি সাহেক আমাকে শাসিয়ে আরো বলেন, আমার বোন নাকি খারাপ প্রকৃতির মেয়ে। সে নাকি পতিতার ব্যবসা করে। পরে আমার ও আমার কিশোরী বোনের কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে থানা থেকে বের করে দেয়। পরে ধর্ষিতার ভাই কামরুল ইসলাম বিষয়টি নেত্রকোনা পুলিশ সুপারকে অবহিত করলে পুলিশ সুপার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে সংশ্লিষ্ট থানার ওসিকে মামলা নেয়ার নির্দেশ দেন। কামরুল আরো জানান, পরে এসপি স্যারের কথায় ওসি সাহেব আমাকে ও আমার বোনকে ফোন করে মামলা নেয়ার কথা বলে থানায় নিয়ে যায়। পরে আমার বোনকে থানার একটি আলাদা কক্ষে দীর্ঘক্ষণ আটকে রাখেন। তখন তিনি হুমকি দেন, তোর কতো বড় সাহস, আমার বিরুদ্ধে এসপি’র কাছে অভিযোগ করিস। পরে আমাকে ও আমার বোনকে ৪৮ ঘন্টা থানায় আটকে রাখার পর পৃথক দুটি সাদা কাগজে আমাদের ইচ্ছের বিরুদ্ধে স্বাক্ষর রেখে বলেন, তোরা এখন যা মামলা নেয়া হবে। কিন্তু ঘটনার ৬ মাস পেরিয়ে গেলেও অভিযোগটি মামলা আকারে অন্তভর্‚ক্ত করেননি। দেশে করোনা পরিস্থিতির কারণে আমরা আদালতের মামলা দায়ের করতে পারিনি। ধর্ষক এলাকার প্রভাবশালী ব্যাক্তির ছেলে হওয়ায় ও ওসি স্যারের হুমকির ভয়ে আমরা ৬ মাস যাবৎ বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো জানান, ওসি রাশেদুজ্জামান আমার বোনকে খারাপ ভাষায় গালি গালাজ করেছে। আমার বোন ওসি সাহেবকে বলেন, স্যার আমি আপনার মেয়ের মতো। তারপরও তিনি আমার বোনকে বেশ্যা বলে আখ্যায়িত করেন। একজন নারী পুলিশকে দিয়ে আমার বোনের চোখ ও হাত পেছনে বেঁধে ৬ ঘন্টা আটকে রাখেন। কামরুল আরো জানান, প্রিন্স এলাকার প্রভাবশালী হওয়া বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছেন ওসি সাহেব। তাই তিনি এই ঘটনার সুষ্ট তদন্ত ও ওসি সাহেবের এমন আচরনের বিচার প্রাথর্না করে পুলিশ মহা-পরির্দশক (আইজিপি) বরাবরে গত ১০ জুন একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সংবাদ সম্মেলনের বিষয়টি নিয়ে ওসি রাশেদুজ্জামানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এসব আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র । এ ব্যপারে নেত্রকোনা পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সি জানান, সংবাদ সম্মেলনের খবরটি শুনেছি, যেহেতু বিষয়টি অনেকদিন পূর্বের তাই খোঁজ খবর নিয়ে পরর্বর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.