করোনাভাইরাসের টেস্ট কিট ও স্বর্ণের দাম কমিয়ে প্রস্তাবিত বাজেট উত্থাপন করা হয়েছে এবং সিগারেট ও তামাকজাতীয় পণ্যের দাম বাড়ানো হয়েছে। আজ (বৃহস্পতিবার) বিকাল তিনটায় জাতীয় সংসদে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করেন। ‘অর্থনৈতিক উত্তরণ: ভবিষ্যৎ পথ পরিক্রমা’ শিরোনামে ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের জন্য ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে যেখানে ৬ শতাংশ ঘাটতি রয়েছে যা চলতি বছরের তুলনায় ১ শতাংশ বেশি। করোনাভাইরাস মোকাবিলার জন্য এবার স্বাস্থ্য ও কৃষিখাত ঘিরে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। বাজেটে করোনা ভাইডরাসে ( কোভিড-১৯) আক্রান্তদের চিকিৎসা দিতে যেসব আমদানিকৃত চিকিৎসা সরঞ্জামের প্রয়োজন, সেগুলোর দাম কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। যে সব পন্য‘র দাম বাড়তে পারে: সিগারেট, জর্দা বা তামাকজাতীয় পণ্য, আমদানি করা পেঁয়াজ, লবন, মধু, দুধ, দুগ্ধজাতীয় পণ্য, চকলেট, আমদানি করা অ্যালকোহল। অনলাইন কেনাকাটা, ইন্টারনেটের খরচ, মোবাইল ফোনের খরচ ও মোবাইল ফোনের সিম কার্ড ও আসবাবপত্র। বিদেশি টেলিভিশন, প্রসাধন সামগ্রী, সিরামিকের সিঙ্ক, বেসিন, কার ও জিপের নিবন্ধন ব্যয়। সাইকেল ও বিদেশি মোটর সাইকেল, চার্টার্ড বিমান ও হেলিকপ্টার ভাড়, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত লঞ্চ সার্ভিস, আলোকসজ্জা, ড্রেজা, লোহা, বাণিজ্যিক যানবাহনের যন্ত্রাংশ, ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশ ও ফার্নেস তেল। যে সসক পন্য’র দাম কমতে পারে তা হলো: এলপিজি সিলিন্ডার, স্বর্ণ, স্যানিটারি ন্যাপকিন ও ডায়পার, জুতা তৈরির কাঁচামাল, সরিষার তেল, চিনি, আলু ও ভুট্টা থেকে স্থানীয়ভাবে প্রক্রিয়াজাত খাবার, করোনাভাইরাস টেস্ট কিট, মাস্ক, গ্লাভস, পিপিই এবং আইসিইউ যন্ত্রপাতি, ডিটারজেন্ট, মৎস্য, পোল্ট্রি ও ডেইরি শিল্পের কাঁচামাল, রেফ্রিজারেটর ও এয়ারকন্ডিশনারের কম্প্রেসার, আমদানি করা কৃষিযন্ত্র ও যন্ত্রাংশ, কাগজ, প্লাস্টিক ও প্যাকেজিং, সৌর ব্যাটারি, পলিস্টার, রেয়ন, কটন ও অন্যান্য সিনথেটিক সুতা এবং টেক্সটাইলের কাঁচামাল, বেইজ অয়েল, লুব্রিকেটিং অয়েল ও লিক্যুইড প্যারাফিন, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রী, সার, বীজ, কীটনাশক জীবন রক্ষাকারী ওষুধ, কাঁচা তুলোসহ আরও কয়েকটি শিল্পের কাঁচামালের দাম অপরিবর্তিত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। ২০২০-২১ অর্থ বছরের বাজেটে ব্যক্তিগত করের হার কমানো হলেও ব্যাংক হিসাবের স্থিতির ওপর আবগারি শুল্কের হার বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। ব্যাংক হিসেবে ১০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা জমা থাকলে আবগারি শুল্ক আগে যেখানে ২৫০০ টাকা দিতে হতো। এখন সেটা বাড়িয়ে ৩০০০ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ব্যাংক হিসেবের স্থিতি এক কোটি। টাকা ৫ কোটি টাকা হলে এই আবগারি শুল্ক ১২ হাজার থেকে বাড়িয়ে ১৫ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ব্যাংক হিসেবের স্থিতি ৫ কোটি টাকার বেশি হলে আবগারি শুল্কের পরিমাণ ২৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪০ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে ব্যাংক হিসাবের স্থিতি ১০ লাখের নীচে হলে আবগারি শুল্কের হার আগের মতোই থাকবে। প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা। যা চলতি অর্থবছর অর্থাৎ ২০১৯-২০ অর্থবছরের চেয়ে ১৩.২% বেশি। টাকার অংকে এই পার্থক্য ৬৬ হাজার ৪২৩ কোটি টাকা।