|| ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে কুলশী গ্রামে কাঁচা রাস্তায় পায়ের জুতো হাতে নিয়ে চলছে পথিক- দৈনিক বাংলার অধিকার
প্রকাশের তারিখঃ ১১ জুন, ২০২০
সিদ্দিকুর রহমান নয়ন, শাহরাস্তি:
শাহরাস্তি উপজেলার ১০নং টামটা দক্ষিণ ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড কুলশী পাটোয়ারী বাড়ির সামনে মুরাদ পাটোয়ারীর বাসভবনের সম্মুখে এক কৃষকের ধান বোঝাই ভ্যান গাড়ি উল্টে কাদা মাটিতে মাখামাখি। কৃষকের চোখে অশ্রুর বন্যা। কে বুঝবে এই কষ্টের কতটুকু জ্বালা-যন্ত্রণা। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে রোদে জ্বলে বৃষ্টিতে ভিজে কৃষক ধান বনে মাঠে। সে ধান তিল তিল করে বড় হয় ফলন আসে ঘরে। সেই কষ্টের ফসল যখন বিনষ্ট হয়ে যায় তখন একটি সন্তান হারা বেদনার মতই ওই কৃষকের কাছে মনে হয়। আমি আপনি হয়তোবা দেখে বা ছবি তুলে সে কষ্টটা বুঝতে পারব না। তার মনে যে কত জ্বালা যন্ত্রণা। সেতো নিয়ে যাচ্ছিল হয়তোবা হাটে বিক্রি করে টাকা উপার্জন করবে। সেই টাকা দিয়ে পরিবার পরিজনদের নিয়ে দু'মুঠো ডাল ভাত খেয়ে জীবন যাপন করবে। তার চেয়ে বেশি কিছু নয়। নেই আলিশান বাড়ি, নেই কোন গাড়ি। কোনরকম ঠেলাগাড়ি বা ভ্যান গাড়ি দিয়ে এদিক থেকে ওদিক ধানগুলো পারাপার করছে। ছোট্ট শিশু সন্তানকে দিয়েচে। বেনের সামনের চাকাটা সোজা রাখতে, কি বুঝে অবুঝ শিশুটি। সেতো ঠেলাগাড়ি সামনের চাকা টি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। পিছনে ছিল ছোট ভাই ও বাবা গাড়িটি যখন কাদামাটিতে লেটকে ছিটকে পড়ে যায় তখন আশপাশের লোকজন ছুটে এসে ছোট ছোট শিশু ছেলে দুটিকে ও তার বাবাকে ধানের বস্তা গুলো ঠেলাগাড়ির কাদা মাটির উপর থেকে সরিয়ে গাড়িটি শুকনোতে নিয়ে আবার তুলে দেওয়ার পর অশ্রু ভেজা কণ্ঠে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। এ যেন এক হৃদয় বিদারক ঘটনা আজ আমার চোখের সামনে ঘটে গেল। যেটা দেখে নিজে নিজকে ঠিক রাখতে পারিনি। তাই কলম ধরলাম হাতে। হয়তোবা এ লেখনীর কারণে যদি কাদামাটি রাস্তাটি পাকা হয়ে যায়। তাহলে হয়তোবা এই ইউনিয়নের মানুষগুলো বা আশে পাশের বাড়ির পথচারী গুলো যদি একটুখানি হলেও পাকা সড়কে হেঁটে সন্তুষ্ট হয় তাহলে হয়তোবা আমার এই লেখাটুকু কাজে আসবে। এ ব্যাপারে উপস্থিত কয়েকজন ব্যক্তি জানান কুলশী বটতলী থেকে মুনা দরবেশের বাড়ির সামনের রাস্তা টুকু দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থা হয়ে পড়ে আছে।।এই রাস্তা দিয়ে সিএনজি, অটো, মোটরসাইকেল, রিক্সা ভ্যান যাওয়া তো দূরের কথা। পথিক হাটা দুষ্কর এ যেন এক মরণফাঁদে পরিণত হয়ে যায় একটুখানি বৃষ্টি এলে। এখন বর্ষা, কিছুক্ষণ পর পর আসছে বৃষ্টি। মানুষের দুর্ভোগ একের পর এক বেড়েই চলছে। কৃষক ধান নিয়ে আসা-যাওয়া করছে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ রাস্তা দিয়ে। প্রতিদিন কোন না কোন ছোটখাটো দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। কবে যাবে এই অভিশপ্ত রাস্তার অভিশাপ। মানুষগুলো খুব কষ্টের মাঝে হাঁটাচলা করছে। পায়ের জুতো হাতে নিয়ে চলছে পথিক।
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.