কচুয়া প্রতিনিধঃ
করোনা দুর্যোগকালে ইমাম-মুয়াজ্জিনগণ কষ্টকর সময় অতিবাহিত করছেন। পরিবারের দুঃখ-বেদনা ও কষ্ট বুকে নিয়ে দায়িত্ব পালন করে চলেছেন তারা। পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গত ১৪ মে ২০২০ বৃহস্পতিবার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে কর্মহীন অসহায় মানুষের জন্য সরাসরি মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে নগদ অর্থ পাঠানো কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেশের সব মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিনের জন্য বিশেষ ‘ঈদ উপহার’ তথা আর্থিক সহায়তার ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সে লক্ষে সারা দেশের জেলা প্রশাসকদের একাউন্টে টাকা হস্থান্তর করা হয়। জেলা থেকে উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার একাউন্ট হয়ে মসজিদগুলোতে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উপহার বিতরণ হচ্ছে। কোথাও ঈদের আগেই এই উপহার পেয়ে গেছেন, আবার কোথাও পাচ্ছেন ঈদের পর। তবে, কোথাও কোথাও মসজিদ কমিটির হাতে এই অর্থ তুলে দেয়ায় পাচ্ছেন না ইমাম-মুয়াজ্জিনগণ। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ হতে দেখা যায় বিভিন্ন মহলের।
এসব বিষয়ে মুখ খোলেন ধর্মপ্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শেখ আব্দুল্লাহ। ৫ জুন এক পত্রিকার এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘লকডাউনের সময়ে ইমাম-মুয়াজ্জিনগণ তাদের দায়িত্ব পালনে অটল ছিলেন। স্বল্প বেতনে আলেমগণ খেদমত করছেন। অনেক জায়গায় ইমাম-মুয়াজ্জিনদের বেতন দেওয়া হয়নি। মসজিদ কমিটিকে দেওয়া মানে এই না যে, এই অনুদান ইমাম-মুয়াজ্জিনদের তারা দেবেন না। এবার ইমাম-মুয়াজ্জিনদের তেমন হাদিয়া দেওয়া হয়নি। এই সময়ে তাদের সংসার পরিচালনা করতে খুবই কষ্ট হচ্ছে। করোনা ভাইরাসের এই সময়ে ইমাম-মুয়াজ্জিনদের পরিবারের কষ্ট লাঘব করার জন্যই প্রধানমন্ত্রী এই অনুদান প্রদান করছেন। মসজিদ কমিটির উচিত তাদের সম্পূর্ণ অনুদান প্রদান করা।’
ইমাম-মুয়াজ্জিনদের মূল্যায়নে তিনি বলেন, ইমাম ও মুয়াজ্জিনগণ আলেম। তারা আল্লাহর দ্বীন প্রচারের জন্য মেহনত করে যাচ্ছেন। আমাদের দেশে তারা শুধু আজান দেওয়া ও নামাজ পড়ানোর ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ নন। সমাজ পরিবর্তনেও তাদের ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে। মাদক, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতি নির্মূলসহ গুজব প্রতিরোধ করছেন মসজিদের খতিব ইমাম ও মুয়াজ্জিনগণ। তারাও বঙ্গবন্ধুর দেশকে সোনার বাংলায় পরিণত করার চেষ্টা করছেন। করোনা পরিস্থিতিতে প্রত্যেক এলাকায় সচেনতা তৈরি করছেন ইমাম ও মুয়াজ্জিনগণ। করোনায় মৃত্যুবরণকারী ব্যক্তির আত্মীয়রা লাশের কাছে আসতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করলেও আমাদের দেশের আলেমগণ গোসল, কাফন, জানাজা, দাফনের মতো কঠিন কাজ পর্যন্ত করে যাচ্ছেন। এমনকি তারা করোনায় আক্রান্ত মৃত্যু বরণকারী অন্য ধর্মীয় লোকদের ধর্মীয় নিয়ম অনুযায়ী সত্কার্য করছেন। তাদের এই অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।