|| ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ২০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
সোহেল হত্যা মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে বহাল তবিয়তে ফায়ারম্যান মোখলেছুজ্জামান তালুকদার – দৈনিক বাংলার অধিকার
প্রকাশের তারিখঃ ২১ মে, ২০২০
আল-আমিন নেত্রকোনা প্রতিনিধিঃ
নেত্রকোনার আলোচিত 'সোহেল হত্যা' মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে বহাল তবিয়তেই আছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর, ময়মনসিংহ এর ফায়ারম্যান মোখলেছুজ্জামান তালুকদার ওরফে এরশাদ(৪০)।
১৩ মে ২০১৯ ইং তারিখ সাদেকুর রহমান জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত, মদন, নেত্রকোনা মদন থানার মোঃ নং- ১৮(১)১৫, জি.আর ১৮(২)১৫ এর দঃবিঃ ১৪৩/৪৪৭/৩২৪/৩০৭/৩০২/ ১১৪/১০৯/৩৪ ধারায় সাদেকুর রহমান, জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, আমলী আদালত, মদন,নেত্রকোনা মুখলেছুজ্জামান তালুকদার ওরফে এরশাদ সহ পলাতক ১৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
এছাড়াও অপর একটি মামলায় ফায়ারম্যান মোখলেছুজ্জামান তালুকদার ওরফে এরশাদের বিরুদ্ধে ৩২৬ ধারায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে। যাহা- মদন থানার মামলা নং- ১৫(১)১৪।
অদ্যাবধি 'সোহেল হত্যা' মামলার প্রধান আসামি মোখলেছুজ্জামান ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর ময়মনসিংহে ফায়ারম্যান হিসাবে কর্মরত থেকে চাকরির অন্তরালে নিজেকে আত্নগোপন করে রেখেছে!
এজাহার ও চার্যশীট ভুক্ত আলোচিত 'সোহেল হত্যা' মামলার প্রধান আসামীর বিরুদ্ধে আদালত কর্তৃক গ্রেপ্তারি পরোয়ানাকৃত মুখলেছুজ্জামান তালুকদার ওরফে এরশাদকে গ্রেপ্তারের সহযোগিতা চেয়ে ৪ মে সোমবার মহা-পরিচালক ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর, ঢাকা বরাবর লিখিত আবেদন করেন ভিক্টিম সোহেলের পিতা মোঃ হাবিবুর রহমান হাবি।
এছাড়াও পুলিশ সুপার নেত্রকোনা, উপ-পরিচালক ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ময়মনসিংহ, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মদন,নেত্রকোনা, উপ-সহকারী পরিচালক, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, নেত্রকোনা ও জেলার সাংবাদিকবৃন্দকে অনুলিপি প্রদান করেন।
মামলার এজাহার ও চার্যশীট ভূক্ত প্রধান আসামি মোখলেছুজ্জামান, মদন উপজেলার দড়িবিন্নী গ্রামের মৃত সিরাজুল হক তালুকদার ওরফে সেলু মিয়ার ছেলে। ভিক্টিম সোহেল (২৩) একই গ্রামের মোঃ হাবিবুর রহমান হাবি'র(৬০) পুত্র।
ঘটনার দিন ও সময় আসামি মোখলেছুজ্জামান তালুকদার ওরফে এরশাদ কিশোরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এ কর্মরত ছিলেন। কিন্তু নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া থানায় নতুন ফায়ার স্টেশন চালু হওয়ায় কেন্দুয়া ফায়ার স্টেশনে সাময়িক ডিউটি করার জন্য কেন্দুয়ায় অবস্থান করেন এবং কেন্দুয়ায় অবস্থানরত ঘটনার দিন ও সময়ে নিকটবর্তী মদন- দড়িবিন্নী গ্রামে হত্যাকান্ডটি ঘটান বলে অভিযোগ করেন ভিক্টিমের বাবা।
বর্তমান ময়মনসিংহ বিভাগের উপ-পরিচালক আবুল হোসেন, সহকারী-পরিচালক হিসেবে ময়মনসিংহে কর্মরত ছিলেন। এবং বর্তমান সহকারী পরিচালক মোঃ মনিরুজ্জামান উপ-সহকারী পরিচালক হিসেবে নেত্রকোনায় কর্মরত ছিলেন, বিধায় অভিযুক্ত ফায়ারম্যান মোখলেছুজ্জামান তাং এরশাদ বর্তমান উপ-পরিচালক এবং সহকারী পরিচালকের সাথে গভীর সম্পর্ক থাকায় তার ডিউটি রেজিস্ট্রার সহ অন্যান্য আলামত নষ্ট করার পায়তারা করেছেন বলে অভিযোগ করেন মামলার বাদী ভিক্টিম সোহেলের বাবা।
জানা যায়, নেত্রকোনা মদন উপজেলার চাটুয়াকুড়ি বিলের জায়গা দখলকে কেন্দ্র করে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। ভিক্টিমের বাবা মোঃ হাবি চাটুয়াকুড়ি বিলে অন্যের কাছ থেকে ১.৪০ একর জমি পত্তন নিয়ে নিজ হালে চাষাবাদ করে আসছিল। পত্তনকৃত জমির দখল ছেড়ে দেওয়ার জন্য ভিক্টিমের পরিবাকে হুমকি দিয়ে আসছিল এরশাদ গং। পত্তনকৃত জমির দখল না ছাড়ায়, ২৪ জানুয়ারি ২০১৫ ইং নিজ বাড়ির সামনের মরিচ ক্ষেতে কাজ করা অবস্থায় ভিক্টিম সোহেলকে মোখলেছুজ্জামান গং পরিকল্পিত সংঘবদ্ধ হামলা চালিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে।
মোঃ আবু বকর সিদ্দিক (বিপিএম), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেষ্টিকেশন (পিবিআই) ময়মনসিংহ জেলা, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে প্রতিবেদন দাখিল করেন।
উচ্চতর আদালত হতে ০৪-১১-২০১৯ তারিখ হতে ০৬ মাসের অন্তর্বতীকালীন জামিনে মুক্ত আরেক আসামি 'মোখলেছুজ্জামান জানু' র নামের সাথে মিল থাকার সুযোগে হাইকোর্ট অর্ডারকে 'মোখলেছুজ্জামান' তালুকদার ওরফে এরশাদ চালাকির সাথে নিজ নামে চালিয়ে দিয়ে সকলকে বোকা বানিয়ে ধোঁকা দিয়ে আসছে বলে জানান, মামলার বাদী ও ভিক্টিম সোহেলের পিতা মোঃ হাবিবুর রহমান হাবি।
চার্যশীটভুক্ত প্রধান আসামী মুখলেছুজ্জামান তালুকদার ওরফে এরশাদের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর তাকে গ্রেপ্তার করতে আর কোন প্রতিবন্ধকতা নেই বলে জানান, আইনজীবী আসাদুজ্জামান।
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.