মোঃ জুয়েল রানা (নীলফামারী প্রতিনিধি) নীলফামারীর সৈয়দপুরে নোভেল করোনা ভাইরাস পজেটিভ রোগীর বাড়িসহ আশেপাশের ৪টি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। অপরদিকে করোনাক্রান্ত হওয়ার কথা গোপন করে বাড়িতে অবস্থানকারী জাহাঙ্গীর আলম নামের ওই ব্যক্তিকে ২৮ এপ্রিল রাত ৪ টার দিকে শহরের কাজিপাড়া থেকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, জাহাঙ্গীর আলম পার্শ্ববর্তী রংপুরের তাঁরাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট। করোনা প্রাদূর্ভাবের পর থেকে তিনি সন্দেহভাজনদের করোনা নমুনা সংগ্রহের কাজ করছিলেন। এমতাবস্থায় ওই প্রতিষ্ঠানের নমুনা সংগ্রহকারী দলের ৩ জনও নিজ উদ্যোগেই তাদের করোনা টেস্ট করা প্রয়োজন মনে করে নিজেদের নমুনাও প্রেরণ করে রংপুরে। গত ২৭ এপ্রিল সন্ধায় তাদের মধ্যে জাহাঙ্গীর আলমসহ ২ জনের টেস্ট রেজাল্ট পজেটিভ আসে।
জানা যায়, সৈয়দপুর শহরের কাজিপাড়া পানির ট্যাংকির পূর্বপাশের এক বাড়িতে তিনি স্বপরিবারে ভাড়া থাকেন। তিনি প্রতিদিন তাঁরাগঞ্জ থেকে সৈয়দপুরে যাতায়াত করতেন এবং সৈয়দপুরের বাজারেই নিত্য প্রয়োজনীয় পন্য সামগ্রী কিনতে যেতেন। বিষয়টি জানতে পেরে প্রশাসনের সহযোগিতায় গত রাত আনুমানিক ১২ টার দিকে তার বাড়ি থেকে তাকে করে সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে তাকে রাত ৪ টার দিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। সে সাথে পরিবারের অন্যান্য ৪ সদস্যকে হোম কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে। আজ তাদেরও নমুনা সংগ্রহ করে রংপুরে পাঠানো হবে।
এ ব্যাপারে সৈয়দপুর করোনা ইউনিটের প্রধান সমন্বয়ক ডাঃ মোঃ শহিদুজ্জামান জানান, করোনা রোগীদের নমুনা সংগ্রহ করতে গিয়ে হয়তো তিনি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। কিন্তু বাড়িতে অবস্থান করে পরিবারের সকলকেই ঝুঁকিতে ফেলেছেন। যে কারণে এখন তাদেরও নমুনা সংগ্রহ করা হবে। সে সাথে তার বিগত কয়েকদিনের ইতিহাস সংগ্রহ করা হবে। এতে আরও কেউ তার সংস্পর্শে এসে থাকলে তাদেরকেও পরীক্ষার আওতায় আনা হবে।
সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ নাসিম আহমেদ জানান, একজন স্বাস্থ্যকর্মী হিসেবে করোনার ভয়াবহতা সম্পর্কে তিনি খুব ভাল করেই অবগত আছেন। তারপরও তিনি স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে গেছেন। কিন্তু দূর্ভাগ্যক্রমে তিনি নিজেই করোনা পজেটিভ আক্রান্ত হয়েছেন। তার পরিবারের অন্য সদস্যসহ আর কেউ তার সংস্পর্শে এসেছে কি না তা নির্নয় করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
যদিও আমরা এখন পর্যন্ত সৈয়দপুরকে সার্বিকভাবে ঝুঁকিমুক্ত রাখতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি এবং তার ফলে সৈয়দপুরে করোনা আক্রান্ত কোন ব্যক্তিকে পাওয়া যায়নি। এটাই প্রথম একজনকে পাওয়া গেলো। তারপরও নাগরিকরা যদি অসচেতনতা প্রদর্শন করে তাহলে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়বে। তিনি সকলের প্রতি সরকারী নির্দেশনা মেনে ঘরে থাকার জন্য আহ্বান জানান।