|| ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ২০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
বারহাট্টায় সরকারি খাল দখল করে ফিসরী ও দোকান-ঘর নির্মাণ- দৈনিক বাংলার অধিকার
প্রকাশের তারিখঃ ১৭ মার্চ, ২০২০
আল-আমিন,নেত্রকোনা প্রতিনিধি: নেত্রকোনা বারহাট্টা উপজেলার ১নং বাউসী ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের হারুলিয়া বাজারের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া সরকারি খালের জায়গা অবৈধভাবে দখল করে দোকান ঘর নির্মাণ ও ফিসারী করার অভিযোগ উঠেছে।
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্ষার সময় এই খাল দিয়ে কংশ নদীর প্রায় ১০ শতাংশ পানি বেরিয়ে যায় এবং এই পানি বেরিয়ে যাওয়া কারণে রক্ষা পায় প্রায় ২ থেকে ৩ হাজার একর আবাদী জমি।
কিন্তু গ্রামের কয়েকজন অসাধু ব্যক্তি হারুলিয়া বাজারে ১নং খাস খতিয়ানভূক্ত বি আর এস ৫৬৭ দাগের হালটে অবৈধভাবে দখল করে হারুলিয়া গ্রামের সুমন চন্দ্র সরকার, অসীম চক্রবর্তী বাবুল, জামাল উদ্দিন, সোহরাব, আবু চাঁন, শহিদুল ইসলাম ভাষানী সম্প্রতি দখল করেন। তারা মাটি দিয়ে খাল ভরাট করে আধা পাকা ও টিনের দোকান ঘর নির্মাণ করেছেন।
সরেজমিনে জানতে চাইলে কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, প্রথম অবস্থায় ২০১০ সালে তাদেরকে সরকারি কর্মকর্তারা এসে উচ্ছেদ করেন। কিছু দিন যেতে না যেতে পুণরায় তারা সরকারি খালটি মাটি দিয়ে ভরাট করে দোকান নির্মাণ করেছে। এখন আবার সুমন সরকার তার দোকান ঘরটি আধা পাকা নির্মাণের কাজ করছে।
এবিষয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, ‘খাস-টাস বুঝি না, খালি জায়গা পেয়েছি দোকান করে ব্যবসা করছি
এর বেশি কিছু বুঝি না। সরকারি জায়গা সরকারের লোকজন আসলে পরে বুঝা যাবে।
অন্যদিকে হারুলিয়া বাজারের প্রায় এক শত বা দুই শত গজ দক্ষিণে এই লাটহালী খালের এক তীতৃয় আংশ জায়গা মাটি কেটে ভরাট করে ফিসারী নির্মাণ করছে হারুলিয়া গ্রামের মৃত ঈমান হোসেনের ছেলে আব্দুল সালাম।
কিন্তু তার'ই প্রতিবেশি দুলা মিয়া নিষেধ করা সত্বেও এই ব্যক্তির নিষেধ অমান্য করে মাঠি কাটা শুরু করে আব্দুল সালাম।
মাটি কেটে খালে বাধ দিয়ে ফিসারী করার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি কোনো রকম কথা বলতে রাজি হননি।
এই বিষয়ে বাউসী ইউপি চেয়ারম্যান হবি উল্লাহ অবগত হলে তিনি নিজে এবং স্থানীয় ইউপি মেম্বার স্বশরীরে গিয়ে নিষেধ করেন। তাদের নিষেধ কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে শুরু করেন ফিসারীর নির্মাণ কাজ।
এবিষয়ে বাউসী ইউপি চেয়ারম্যান আরও বলেন, আমাদের নিষেধ অমান্য করে মাঠি কাটা শুরু করে আব্দুল সালাম।
যদি এই ফিসারী'র পাড় দিয়ে বাধ তৈরি হয়ে যায় তাহলে বর্ষাকালে উক্ত খালের ৫০ শতাংশ পানি বাধা পাবে। আর এই পানি বেরিয়ে যাওয়ার খাল ছাড়া অন্য কোনো রাস্তা নেই। যার ফলে সৃষ্টি হবে বন্যা আর এই বন্যার কারণে ক্ষতি হবে আবাদী জমি সহ প্রায় ৫ থেকে ৬ শত নিচু ঘর-বাড়ি এবং বিপাকে পরবে কয়েকশত পরিবার।
বাউসী ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা অরুন কান্তি সরকার জানান, এলাকাবাসীর অভিযোগ পাওয়ার পর আমি এবং আমার অফিস সহায়ক আশিষ কুমার সরকারকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে গিয়ে দেখতে পাই, যেখানে মাটি ভরাট করে দোকান ঘর করা হচ্ছে, ওই জায়গা হারুলিয়া বাজারে ১নং খাস খতিয়ানভূক্ত বি আর এস ৫৬৭ দাগের হালটে সরকারি খাল।
তাৎক্ষণিক আমরা সুমন সরকার কে দোকান নির্মাণ কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দেই এবং সুমন সরকার সহ আরও যারা অবৈধভাবে খাল দখল করে দোকান ঘর নির্মাণ করেছে তাদেরকে ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ে তলব করি। কিন্তু তাঁরা কেউ কার্যালয়ে আসেননি। এমনকি ফিসারী নির্মাণকারী আব্দুল সালামকেও আমি তলব করেছি সে-ও আমার ডাকে কোনো রকম সারা দেয়নি।
তাদেরকে ভূমি অফিসে ডাকার পরও তাঁরা না আসায় বিষয়টি লিখিতভাবে তাৎক্ষনিক বারহাট্টা উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি বরাবর অবৈধ দখল স্থাপনাগুলি উচ্ছেদ ও ফিসারী নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দ্রুত পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রেরণ করেছি।
আল-আমিন নেত্রকোনা
তাং ১৭/২/২০২০
০১৭২৪৬৫৭৭৩৭
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.