|| ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
কচুয়ায় শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে নজরুল ইসলাম বাচ্চু’র পাঠাগার ও স্কুল- দৈনিক বাংলার অধিকার
প্রকাশের তারিখঃ ১৬ মার্চ, ২০২০
মোঃ মাসুদ রানা,কচুয়াঃ
দৈনন্দিন পাঠ্যাভাসের চর্চা যখন হারিয়ে যাওয়ার উপক্রম, সেখানে চাঁদপুরের কচুয়ায় নতুন করে পাঠক তৈরি করছে ৬৬ নং চাঁদপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গড়ে উঠা ইয়াছিন স্মৃতি পাঠাগার। পাঠাগারটি খুব বেশি বড় না হলেও স্থানীয় ভাবে সমাজে আলো ছড়াচ্ছে। পাঠাগারটিতে হাতেগোনা বেশকিছু বই থাকলেও সেসব বইয়ের পাঠক দিনে দিনে বেড়ে চলছে।
কচুয়া পৌর সদরের দক্ষিণে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার অদূরে বিদ্যালয়ে নির্মিত পাঠাগারটি প্রতিষ্ঠা করেন সোনালী ব্যাংকের সাবেক উর্ধ্বোতন কর্মকর্তা ও সাদা মনের মানুষ একেএম নজরুল ইসলাম বাচ্চু। ২০০৯ সালে তিনি নিজ অর্থায়নে তাঁর প্রয়াত বাবা মরহুম ইয়াছিন মৃধার নামে ৬৬নং চাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠাগারটি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনিও সোনালী ব্যাংকের উর্ধ্বোতন কর্মকর্তা ছিলেন। ২০০৬ সালের ২৪ শে ডিসেম্বর ইয়াছিন মৃধা দুনিয়ার মোহ ত্যাগ পরোপারে পারি জমান।
জানা গেছে, কচুয়া উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের অধিবাসী বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ও সমাজসেবক একেএম নজরুল ইসলাম বাচ্চু ২০১৭ সালের ৪ নভেম্বর সোনালী ব্যাংকের চাকুরী থেকে অবসর গ্রহণ করেন। তিনি ২০০৯ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ সময়ে পর পর তিন বার চাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সভাপতি নির্বাচিত হন। বর্তমানে তিনি চাঁদপুর হয়রত পাঁচপীর (রহঃ) মাজার শরীফের সভাপতি ও ৯নং কড়ইয়া ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। তাছাড়া তিনি ২০১৭ ও ২০১৯ সালে উপজেলা পর্যায়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেষ্ঠ বিদ্যোৎসাহী সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি সাদিপুরা-চাঁদপুর এম.এ খালেক মেমোরিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের সাবেক সহ-সভাপতি। ছাত্র জীবনে তিনি খুবই মেধাবী ও কৃতি ভলিবল ও ফুটবলার হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বলেন, এখানে নানান জ্ঞানের বিষয়ে আলোচনা হয়। কবিতা ও বই পড়ার আসর বসে। আমরা এখানে এসে বই পড়ে আনন্দ পাই। যিনি এই পাঠাগারটি প্রতিষ্ঠা করেছেন আমরা তাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।এলাকাবাসী জানান, বিদ্যালয়ের বর্তমান সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম বাচ্ছু এ বিদ্যালয়ে সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে বিদ্যালয়ে যে কোন সময়ের চেয়ে চোখে পড়ার মতো সার্বিক উন্নয়ন হয়েছে। বিশেষ করে সামনের অত্যাধুনিক গেইট নির্মান, শহীদ মিনার নির্মান,পাঠাগারে পাঠক বই পড়তে ও অভিভাবক সমাবেশ করতে দেড় শতাধিক চেয়ার প্রদান, নিজ অর্থায়নে আর্সেনিক মুক্ত টিউবওয়েল স্থাপন, বিভিন্ন সরকারী-বেসকারী, জাতীয় অনুষ্ঠান করতে স্ট্যাজ (মঞ্চ) তৈরীসহ বিগত ১০ বছরে এ বিদ্যালয়ে শতভাগ পাশসহ জিপি-এ ও বৃত্তি পেয়ে আসছে। তাই এমন সভাপতি প্রতিটি বিদ্যালয়ে থাকলে বিদ্যালয়ের চিএ বদলে যাবে।
বিদ্যালয়ে ইয়াছিন স্মৃতি পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা একেএম নজরুল ইসলাম বাচ্চু বলেন, কচুয়া পৌর সদরের কাছাকাছি হলেও চাঁদপুর গ্রাম অনেকটাই পিছিয়ে। স্কুল গুলোতে ভালো পাঠাগার নেই। পাবলিক লাইব্রেরিও নেই এখানে। পড়ার অভ্যাস নেই বলে ক্লাসের বইয়ের বাইরে বইও কেনেনা অনেকে। এ গ্রামের বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা পাঠ্যবোর্ড বইয়ের পাশাপাশি অন্যান্য বিষয়ে জ্ঞানার্জন করার জন্য আমি এ পাঠাগারটি স্থাপন করি। শিক্ষার আলো যেন সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে এটাই আমার মূল লক্ষ্য। এ পাঠাগারে বেশ কয়েকটা পত্রিকা রাখা হয়। ছেলে বুড়ো সবাই পত্রিকা পড়তে আসে পাঠাগারে, আবার দু’ একটা বইও পড়ে থাকেন। এভাবে প্রতিদিন নতুন করে পাঠ্যাভাস তৈরি হচ্ছে ।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জাহিদুল হাসান বলেন, শিক্ষার্থীদের বিকল্প মন ও মানসীকতা ভালো রাখতে বিদ্যালয়ের সভাপতির ব্যক্তিক্রমি আয়োজন। বর্তমানে পাঠকদের চাহিদার তুলনায় বই কম থাকলেও পাঠাগারটি দিনদিন স্থানীয়দের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
কচুয়া: কচুয়ার ৬৬ নং চাঁদপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গড়ে উঠা ইয়াছিন স্মৃতি পাঠাগাওে বই পড়ছে শিক্ষার্থীরা।
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.