|| ২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ২৫শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
অতিথি পাখিদের কলতানে মুখরিত জবই বিল-দৈনিক বাংলার অধিকার
প্রকাশের তারিখঃ ১৪ জানুয়ারি, ২০২০
সোহেল চৌধুরী রানা, নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁর সাপাহার ঐতিহ্যবাহী জবই বিল এখন পরিযায়ী (অতিথি) পাখির কলতানে মুখরিত। ২০২০ সালের শুরু থেকে সুদুর রশিয়া, সাইবেরিয়া সহ বিশ্বের শীত প্রধান দেশ হতে শত শত পাখি বিলে এসে পাখি সৌন্দেয্যের বিকাশ ঘটাচ্ছে।
অতি প্রত্যুষে সরেজমিনে বিল এলাকায় গিয়ে এ দৃশ্য দেখা গেছে, বিদেশ হতে আগত পিয়াং হাঁস, পাতি সরালি, লেঙজা হাঁস, বালি হাঁস, পাতি কূট সহ দেশী জাতের শামুকখোল, পানকৌড়ী, ছন্নি হাঁস বিল এলাকা মুখরিত করে তুলছে। অতিতে এক শ্রেণীর পাষন ব্যক্তি অবাধে বিল হতে এসব অতিথি পাখি শিকার করে হাটবাজারে বিক্রি করত। এমনকি গত বছরও এলাকার কতিপয় ব্যক্তি এ বিল হতে বেশ কিছু পাতি সরালি হাঁস ফাঁদ পেতে ধরে বিক্রিয় করার সময় জবই বিল জীববৈচিত্র সংরক্ষন ও সমাজ কল্যাণ সংস্থার সদস্যগন তাদের হাতে নাতে ধরে ফেলেন। পরে ওই পাখি শিকারীদের উপজেলা নির্বাহী অফিসার কল্যাণ চৌধুরীর নিকট নিয়ে এলে তিনি ভ্রাম্যমান আদালতে তাদের শাস্তি প্রদান করেন। এর পর হতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কঠোরতা ও জীববৈচিত্র সংরক্ষন কমিটির সদস্যদের জোরালো নজর দারিতে বিল এলাকায় যে কোন ধরনের পাখি শিকার বন্ধ রয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে বর্তমানে দেশ বিদেশ হতে হরেক রকম পাখির আগমনে পুরো বিল এলাকা এখন পাখির কলতানে মুখরিত হয়ে উঠছে। বিলে অতিতের মত কচুরি পানা না থাকায় ও এলাকার মানুষ হিংস্র সভাবের হওয়ায় ধিরে ধিরে এক সময় বিলে পাখি আসাই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। বেশ কয়েক বছর ধরে ওই এলাকার কিছু উৎযোগী যুবক জবই বিল জীববৈচিত্র সংরক্ষন ও সমাজ কল্যাণ সংস্থা নামে একটি সংগঠন তৈরী করে বিলে অতিথি পাখি সহ সব ধরনের পাখি শিকার বন্ধ করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এছাড়া বিলে কোন কচুরিপানা না থাকলেও সরকারী ও বে-সরকারী ভাবে মৎস্যজীবিগন খরা মৌসুমে বিলের পানি শুকিয়ে গেলে মা মাছগুলি রক্ষায় বিলের মধ্যে বেশ কিছু এলাকায় বাঁশ কাঠ ও কিছু কচুরিপানা দিয়ে কাঠা নামের একটি করে মাছের অভয়াশ্রম গড়ে তোলে, খরা মৌসুমে মা মাছগুলি যাতে ওই স্থানে লুকিয়ে থাকতে পারে। বর্তমানে জীববৈচিত্র সংরক্ষন কমিটির সদস্যদের প্রচেষ্টাও মৎসজীবিদের তৈরীকৃত কচুরিপানার কাঠা থাকায় অতিতের মত আবারো আস্তে আস্তে শীত মৌসুমে দেশি- বিদেশী পাখিরা অবাধে বিলে আসতে শুরু করেছে। ভবিষ্যতে বিলের বিশাল অংশে কচুরিপানা দিয়ে মাছ সহ পাখিদের বড় ধরণের অভয়াশ্রম এবং বিলের বিভিন্ন দ্বিপগুলিতে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগিয়ে বনাঞ্চল তৈরী করলে সারা বছর বিল এলাকায় পাখিদের আনাগোনায় জবই বিল আবারো ফিরে পেত তার ঐতিহ্য ও নাব্যতা বলে জীববৈচিত্র সংরক্ষন কমিটির সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান জানিয়েছেন। ইতোমধ্যে অনেক পাখি প্রেমিক ব্যক্তিরা পাখির সৌন্দয্য দেখতে বিল এলাকায় এসে বিড় জমাচ্ছে, বিল পাড়ে পর্যাটকদের জন্য ঘোরা ফেরা ও বসার পর্যাপ্ত ব্যাস্থা নেয়া হলে ভবিষ্যতে সাপাহারের জবই বিলটি অত্রালেকার একটি পর্যটক কেন্দ্রে রুপ নিতে পারে বলেও বিলে আগত অসংখ্য পর্যাটক বৃন্দ জানিয়েছেন। তবে নওগাঁ-১আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য সরকারের খাদ্যমন্ত্রালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত খাদ্য মন্ত্রী বাবু সাধন চন্দ্র মজুমদার এমপি সাপাহার উপজেলার জবই বিলটিকে একটি ঐতিহ্যবাহী পর্যটক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে পদক্ষেপ হাতে নিয়েছেন বলে উপজেলা প্রশাসন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।
সোহেল চৌধুরী রানা, নওগাঁ প্রতিনিধি:০১৭৬১-৫৮০৯৫৯
১৪জানুয়ারী/২০২০ইং
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.