|| ২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ২৫শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
শাহরাস্তিতে কাজের বুয়ার সাথে অবৈধ সম্পর্ক, গর্ভের সন্তানকে হত্যা, থানায় মামলা দায়ের,আসামীরা পলাতক- দৈনিক বাংলার অধিকার
প্রকাশের তারিখঃ ১০ নভেম্বর, ২০১৯
মাহমুদুল হাছানঃ চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে কাজের বুয়ার সাথে অবৈধ সম্পর্কের ফসল গর্ভের সন্তানকে হত্যার ঘটনা ঘটেছে।
বিষয়টি ধামাচাপা দিতে এরই মধ্যে দোঁড়ঝাঁপ শুরু করেছে একটি মহল। গত ৬ নভেম্বর বুধবার দুপুরে উপজেলার শাহরাস্তি পৌরসভার ১১ নং ওয়ার্ডের ভিংরা গ্রামে এই ঘটনাটি ঘটে।
জানা যায়, ওই গ্রামের পাটোয়ারী বাড়ির মৃত আলতাব আলীর পুত্র আবুল বাসার'র (৬২) ঘরে ঝি'য়ের কাজ করতো একই বাড়ির মৃত হাসান আলীর স্ত্রী নাছিমা বেগম (৩০)। আবুল বাসারের ৫ পুত্র ও ২ কন্যা সন্তানের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ সাফায়েত উল্লাহ রাকিব'র (১৭) সাথে নাছিমার গড়ে উঠে অবৈধ সম্পর্ক। যার ফলে নাছিমার গর্ভে আসে সন্তান। যা নিয়ে এলাকা জুড়ে চলছে নানা গুঞ্জন। এবিষয়ে নাছিমার বড় ভাই মোঃ ইউসুফ গনি বাদী হয়ে শাহরাস্তি থানায় একটি অভিযোগ করেন।
শাহরাস্তি থানার ওসি শাহআলম বলেন, বিষয়টি জানার সাথে সাথে নাছিমার চাচাত ভাই ইউসুফ গনি ৩জনকে আসামী করে নিজে বাদি হয়ে শাহরাস্তি থানায় ধর্ষণ এবং নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে রাত ১১:৪৫ ঘটিকায় একটি মামলা রজ্জু করে। মামলা নম্বর- ০৭, তারিখ-০৭/১১/২০১৯ ইং। মামলার আসামীরা হলেন :- (১) সাফায়েত উল্লাহ রাকিব, পিতা-আবুল খায়ের পাটওয়ারি(বাসার), গ্রাম-ভিংরা পাটওয়ারি বাড়ি,ডাকঘর-সাহেব বাজার, উপজেলা-শাহরাস্তি, জেলা-চাঁদপুর(মুল আসামী), (২) মোঃ আবুল খায়ের পাটওয়ারি(বাসার) (৫৬),পিতা মৃত-আলতাফ উদ্দিন পাটওয়ারি,গ্রাম-ভিংরা পাটওয়ারি বাড়ি,ডাকঘর-সাহেব বাজার,উপজেলা-শাহরাস্তি,জিলা-চাঁদপুর(মুল আসামীর বাবা) এবং (৩) বিউটি আক্তার(৫৫), স্বামী মৃত- শহীদ উল্লাহ, গ্রাম-শ্রীপুর,ডাকঘর+উপজেলা- শাহরাস্তি,জেলা-চাঁদপুর।
এবিষয়ে ক্ষতিগ্রস্ত নাছিমা বেগম বলেন, বাসু পাটোয়ারীর ছেলে রাকিব আমাকে জোর করে ব্যবহার করেছে। আমি তার মা জাহানারা বেগমকে বিষয়টি অবহিত করি। তিনি গুরুত্ব দেন নি। ঘটনা প্রকাশের আগের দিন মঙ্গলবার সকালে বাসু পাটোয়ারী পরিবার পরিকল্পনা অফিসের মাঠকর্মি মাহমুদা আক্তার বিউটির কাছে নিয়ে যায়। সেখানে নিলে বিউটি আমার গর্ভের সন্তানের বয়স বেশি হওয়ার কোনো কাজ করেন নি। পরে তারা অপারগ হয়ে ডাক্তার তানজিনার হাসপাতালে নিলে সেখানেই আমার একটি মৃত সন্তান প্রসবিত হয়। আমি খুব অসহায়। আজ তারা আমার পাশে নেই। আর্থিক অনটনের কারনে ঔষধ পৈথ্য চলছেনা। আমার দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। বড়টি বাক প্রতিবন্ধী। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, আমার গর্ভের সন্তানকে ঔষধ খাইয়ে বাসু পাটোয়ারী ও তার বড় পুত্র আমানত হোসেনের স্ত্রী নিপা হত্যা করেছে। তিনি এই ঘটনার জন্য সমাজবাসীর কাছে তাদের বিচার দাবী করেন।
আবুল বাসারের স্ত্রী জাহানারা বেগম (৫০) বলেন, আমাকে এই ঘটনাটি প্রথম নাছিমার বড় ননদ আমেনা বেগম জানান। আমি আজ নিরুপায়। আমার ছেলে রাকিব ঘটনা প্রকাশের পর থেকেই বাড়ি ছাড়া। কোথায় আছে তাও জানিনা।
তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে আরও বলেন, নাছিমাকে আমি খুব বিশ্বাস করতাম। তার স্বামীর মৃত্যুর আগ থেকেই সে আমাদের ঘরে ঝি'য়ের কাজ করতো।
আমি তাকে সব সময় বিভিন্ন ভাবে সাহায্য সহযোগিতা করতাম। আজ আমার মুখে কোনো ভাষা নেই।
রাকিবের পিতা আবুল বাসারকে খোঁজ করে পাওয়া যায় নি। তিনি স্থানীয় ঠাকুর বাজারে একজন প্রসিদ্ধ ব্যবসায়ী। তার ব্যবহৃত মোবাইলটিও বন্ধ পাওয়া যায়।
রাকিবের ভাবী সাবিনা ইয়াসমিন নিপা (২৭) বলেন, আমার দেবর খুব ভালো ছেলে। সে স্থানীয় ঠাকুর বাজার চিশতিয়া মাদ্রাসায় দশম শ্রেনীতে পড়ে। আমার দেখা ও জানা মতে এমন কোনো ঘটনা আমার জানা বা শোনা নেই। তবে প্রকাশের দিন সকালে আমার শ্বাশুড়ির নির্দেশে নাছিমাকে গরম চা, নাস্তা আর ঔষধ খেতে দেই।
এলাকাবাসী বলেন, ঘটনাটি বেশ কিছু দিন থেকেই আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে এবং নানা জনের গুঞ্জনে রাকিবের সংপৃক্ততা ভেসে আসছে। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে ঘটে যাওয়া এমন নেক্কারজনক ঘটনাটিতে জড়িত রাকিবের দৃষ্টান্তমূলক বিচার হওয়া উচিত বলে তারা মনে করেন।
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.