|| ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ২০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
আজ বিশ্ব বাঘ দিবস-দৈনিক বাংলার অধিকার
প্রকাশের তারিখঃ ২৯ জুলাই, ২০১৯
স্বপন কুমার রায় খুলনা ব্যুরো,দৈনিক বাংলার অধিকারঃ
বাঘ বাড়াতে শপথ করি,সুন্দরবন রক্ষা করি এই স্লোগান কে সামনে নিয়ে আজ ২৯ জুলাই সোমবার পালিত হবে ‘বিশ্ব বাঘ দিবস ২০১৯’। বাঘ আছে বিশ্বের এমন ১৩টি দেশ একযোগে দিবসটি পালন করবে।
প্রথম বিশ্ব বাঘ দিবস পালিত হয় ২০১০ সালে রাশিয়ার সেন্টপিটার্সবার্গ শহরে। এই সম্মেলনে ২০২২ সালের মধ্যে বিশ্বে বাঘের সংখ্যা দ্বিগুণ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এখনও বাঘ টিকে আছে এমন ১৩টি দেশে ২০১০ সাল থেকে প্রতি বছর এ বিশ্ব বাঘ দিবস হিসেবে পালন করা হয়। বাঘ টিকে থাকা ১৩টি দেশ হচ্ছে, ভারত (১,৭০৬), মালয়েশিয়া (৫০০), বাংলাদেশ(৪৪০), রাশিয়া(৩৬০), ইন্দোনেশিয়া(৩২৫), থাইল্যান্ড(২০০), নেপাল(১৫৫), মিয়ানমার(৮৫), ভুটান(৭৫), চিন (৪৫), কম্বোডিয়া (২০), ভিয়েতনাম(২০), ও লাওস(১৭)।
১৯০০ সালে বাঘের সংখ্যা ছিল প্রায় এক লক্ষ। বর্তমানে কমে বিশ্বে এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৭০০টি বা তারও কম। বাঘ বিশেষজ্ঞদের মতে, বাঘের সংখ্যা দ্রুত কমে যাওয়ার এই প্রবণতা চলমান থাকলে আগামী কয়েক দশকে পৃথিবী থেকে এই সুন্দর প্রাণীটির হারিয়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে।তাই আসুন শপথ করি "বাঘ বাড়াতে শপথ করি ,সুন্দরবন রক্ষা করি"। সর্বশেষ শুমারি অনুসারে,বিশ্বের মধ্যে বাঘ সংরক্ষনে ভারত বর্তমানে প্রথম স্হান অধিকার করেছে।বাংলাদেশে বাঘ বলতে আমরা প্রধানত সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার কে বুঝি।বন বিভাগ জানিয়েছে, যে কোনো সময়ের চেয়ে বর্তমানে সুন্দরবনে বাঘ রক্ষায় বেশি মনোযোগী সরকার। যার কারণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর পদক্ষেপে সুন্দরবনে দস্যুতা এবং চোরা শিকারিদের তৎপরতা কমেছে। সেই সঙ্গে স্থানীয় অধিবাসীদের মধ্যে সচেতনতা বেড়েছে। এসব কারণে সুন্দরবনে আগের তুলনায় বাঘ অনেকটা সুরক্ষিত এবং বাঘের বিচরণক্ষেত্রও নিরাপদ হওয়ার ফলে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সুন্দরবনসংলগ্ন জেলার মানুষকে সচেতন ও বাঘ রক্ষায় সম্পৃক্ত করতে দুই বছর ধরে ঢাকার বাইরে জাতীয়ভাবে পালন করা হচ্ছে ‘বাঘ দিবস’।জানা যায়, রয়েল বেঙ্গল টাইগারের সংখ্যা গণনায় সুন্দরবনে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে শুরু হয় শুমারি। ক্যামেরা ট্রাপিং পদ্ধতিতে এ শুমারির মাঠ পর্যায়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে মে মাসে। কিন্তু দুই মাসেও শুমারির ফল প্রকাশ করা হয়নি। যে কারণে বর্তমানে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা সম্ভব হচ্ছে না। তবে আগামী বছরের প্রথম দিকে ফলাফল প্রকাশের সম্ভাবনার কথা বলছেন কর্তৃপক্ষ। সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, সুন্দরবনে তৃতীয় দফায় ক্যামেরা ট্রাপিং পদ্ধতিতে বাঘ গণনা বা পরিবীক্ষণ শুরু হয় ২০১৮ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি। সুন্দরবনের খুলনা ও শরণখোলা রেঞ্জের দুটি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের ৪৭৮ বর্গকিলোমিটার এলাকায় করা হয় এই মনিটরিং। ২৩৯টি পয়েন্টে গাছ বা খুঁটির সঙ্গে ৬৭০টি ক্যামেরা বসিয়ে এ বাঘ মনিটরিং করা হয়। এর আগে প্রথম দফায় ২০১৩ সালে সুন্দরবনের ২৬ শতাংশ এলাকায় ক্যামেরা ট্রাপিং পদ্ধতিতে বাঘ শুমারি হয়েছিল। ওইসময় বাঘের উপস্থিতি বেশি এমন এলাকা বেছে নেওয়া হয়। এরপর দ্বিতীয় দফায় ২০১৬ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে ২০১৭ সালের ১৫ মার্চ সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জে ক্যামেরা ট্রাপিংয়ের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহের কাজ করা হয়। ২০১৫ সালের মার্চে প্রকাশিত ফলাফল অনুযায়ী, সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ১০৬টি। এর আগে ২০০৪ সালের এক গবেষণায় উল্লেখ করা হয়, সুন্দরবনে বাঘ রয়েছে ৪৪০টি। এর মধ্যে পুরুষ ১২১টি, স্ত্রী ২৯৮টি এবং বাচ্চা রয়েছে ২১টি। তবে সর্বশেষ সুন্দবনের বাঘের সংখ্যা, অবস্থান ও গতিপ্রকৃতি জানতে আবারও মনিটরিং কার্যক্রম শুরু করে বন বিভাগ।সূত্র জানায়, ২০১০ সালে জানুয়ারি মাসে থাইল্যান্ডের হুয়ানে অনুষ্ঠিত হয় টাইগার রেঞ্জ দেশগুলোর ‘এশিয়া মিনিস্ট্রিয়াল কনফারেন্স’। এখান থেকে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়, প্রতিবছর ২৯ জুলাই বিশ্ব বাঘ দিবস পালিত হবে। ওই সাল থেকে এ দিবসটি পালিত হয়। সম্মেলনে বাঘ সংরক্ষণে ৯ দফা পরিকল্পনা গৃহীত হয়। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, ২০২০ সালের মধ্যে বাঘের সংখ্যা দ্বিগুণ করা।
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.