|| ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ১৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
ভেজাল মধু চিনে নিন খুব সহজেই-দৈনিক বাংলার অধিকার
প্রকাশের তারিখঃ ৩ জুলাই, ২০১৯
রূপচর্চায় তো অনেকবারই মধু ব্যবহার করেছেন, কিন্তু চোখে-মুখে জেল্লা তখনই আরও ভালো করে ফুটে ওঠে যখন আপনি থাকেন ভিতর থেকেও সুস্থ থাকেন ৷ বিশ্বের প্রায় বেশিরভাগ দেশেই, বিশেষ করে এশিয়ান দেশ গুলোতে মধু খাওয়ার প্রচলন বেশি। প্রাচীন কাল থেকেই ঔষধ হিসেবে মধু ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, কি করে জানবেন যে মধু আপনি খাচ্ছেন, সেটি খাঁটি কিনা? এখন বাজারে নানান মোড়কে মধু পাওয়া যায়। ভেজাল, রাসায়নিকযুক্ত উপাদানে ভরতি সেসব মধু। কিন্তু ছোট কয়েকটি সহজ পরীক্ষার মাধ্যমে আপনি বুঝতে পারবেন ভেজাল মধু কোনটি, এবং কোনটি আসল মধু ।
আসল মধুর স্বাদ হবে মিষ্টি, এতে কোনও ঝাঁঝালো ভাব থাকবে না। মধুতে কখনও কটু গন্ধ থাকবে না। খাঁটি মধুর গন্ধ হবে মিষ্টি ও আকর্ষণীয়। এক টুকরা ব্লটিং পেপার নিন, তাতে কয়েক ফোঁটা মধু দিন, যদি কাগজ তা সম্পূর্ণ শুষে নেয়, বুঝবেন মধুটি খাঁটি নয়। শীতের দিনে বা ঠাণ্ডায় খাঁটি মধু দানা বেঁধে যায়। একটি মোমবাতি নিয়ে সেটি ভালভাবে মধুতে ডুবিয়ে নিন। এবার আগুন দিয়ে জ্বালাবার চেষ্টা করুন। যদি জ্বলে ওঠে, তাহলে বুঝবেন যে মধু খাঁটি। আর যদি না জ্বলে, বুঝবেন তাতে জল মেশানো রয়েছে৷
কিছুদিন ঘরে রেখে দিলে মধুতে চিনি জমতেই পারে। শিশিসহ মধু গরম জলে কিছুক্ষণ রাখলে চিনি গলে মধু আবার স্বাভাবিক হয়ে আসবে। কিন্তু নকল মধুর ক্ষেত্রে তা হবে না৷ এক টুকরা সাদা কাপড়ে মধু মাখান। আধ ঘণ্টা রাখুন। তারপর জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। দাগ থেকে বুঝতে হবে সেটি ভেজাল মধু৷ এবার গ্লাসে বা বাটিতে কিছুটা জল নিন। তার মধ্যে এক চামচ মধু দিন। যদি মধু জলের সঙ্গে সহজেই মিশে যায়, তাহলে বুঝবেন যে এটা নকল। আসল মধু সহজে মিশবে না।
তবে আসল মধু চিনে নিয়ে মধু ব্যবহার করলে লাভ আপনারই৷ কারণ-
ওজন কমায়- প্রতিদিন সকালে মধু খেলে ওজন কমে। বিশেষ করে সকালে খালি পেটে হালকা গরম জলে লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে খেলে তা ওজন কমাতে সাহায্য করে কিছুদিনের মধ্যেই। এছাড়াও এতে লিভার পরিষ্কার থাকে৷
রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা বাড়ে- শরীরে রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে পারে মধু, কারণ মধুতে আছে প্রচুর পরিমাণে মিনারেল, ভিটামিন ও এনজাইম যা শরীরকে বিভিন্ন অসুখ বিসুখ থেকে রক্ষা করে৷ এছাড়াও প্রতিদিন সকালে এক চামচ মধু খেলে ঠান্ডা লাগা, কফ, কাশি ইত্যাদি সমস্যা কমে যায়।
হৃৎপিণ্ডের সমস্যার ঝুঁকি হ্রাস- মধুর সঙ্গে দারুচিনির গুঁড়ো মিশিয়ে খেলে তা রক্তনালীর সমস্যা দূর করে এবং রক্তের খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ ১০% পর্যন্ত কমিয়ে দেয়। মধু ও দারুচিনির এই মিশ্রণ নিয়মিত খেলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমে৷
হজমে সাহায্য করে- যাদের হজমের সমস্যা রয়েছে তারা প্রতিদিন সকালে মধু খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। মধু পেটের অম্লীয়ভাব কমিয়ে হজম প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে। হজমের সমস্যা দূর করার জন্য মধু খেতে চাইলে প্রতিবার ভারি খাবার খাওয়ার আগে এক চামচ মধু খেয়ে নিন। বিশেষ করে সকালে খালি পেটে এক চামচ মধু কিন্তু খুবই উপকারী৷
শক্তি বাড়ায়- মধুতে আছে প্রাকৃতিক চিনি৷ এই প্রাকৃতিক চিনি শরীরে শক্তি যোগায় এবং শরীরকে কর্মক্ষম রাখে। বিশেষ করে যাদের মিষ্টি জাতীয় কিছু খেতে পছন্দ করেন, তারা অন্য মিষ্টি খাবারের বদলে মধু খেতে পারেন৷ শরীরের দুর্বলতা অথবা বারবার চা-কফুর নেশাকেও কমিয়ে দেয় এই মধু৷
ত্বক ভালো করে- মধুতে রয়েছে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি ফাঙ্গাল উপাদান। ত্বকের যত্নে মধুর জুড়ি মেলা ভার। সকালে ত্বকে মধু লাগিয়ে ৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। এতে মধুর বেশ কিছু উপাদান ত্বক শুষে নেয়। ফলে ত্বক মসৃণ ও সুন্দর হয়। এভাবে নিয়মিত ব্যবহার করলে ত্বকের দাগও চলে যায়।
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.