|| ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ১৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
সংস্কারের অভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে টাঙ্গাইলের ৪ শত বছরের পুরনো আতিয়া জামে মসজিদ-দৈনিক বাংলার অধিকার
প্রকাশের তারিখঃ ১৮ জুন, ২০১৯
মো: আ: হামিদ টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধি:-
সংস্কারের অভাব ও অযত্ন আর অবহেলায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে টাঙ্গাইলের আতিয়া জামে মসজিদ। প্রায় ৪ শত বছরের পুরোনো ইসলামী স্থাপত্য ও বাংলাদেশের অন্যতম প্রত্নতাত্বিক নিদর্শন ঐতিহাসিক আতিয়া জামে মসজিদ। বর্তমানে মসজিদটির তিনটি দেওয়ালের একটি দেওয়ালের মাটির কারুকাজ করা মৌটিফ গুলোতে লোনা ধরে গেছে। শেওলা জমে নষ্ট হতে বসেছে এই সব কারুকাজ। বৃষ্টি হলে মসজিদে চুয়িয়ে চুয়িয়ে বৃষ্টির পানি প্রবেশ করে।
মুসুল্লিদের ওজুর জন্য মসজিদের সামনে একটি পুকুর খনন করা হয়েছিল। আগে পুকুরটিতে বিভিন্ন ধরনের কচ্ছপ দেখা যেত। বর্তমানে মসজিদের এই পুকুরটিতে গৃহস্থালীর কাজ সহ কাপড় কাঁচা, গণহারে এলাকায় লোকজন গোছল করা কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে কচ্ছপ গুলো এখন বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বিভিন্ন ধর্মের মতাদর্শের অনেকেই এখানে আসেন নিজের মনের বাসনা পূরনের জন্য মানত করতে। মজার বিষয় হচ্ছে, রোগমুক্তির জন্য মসজিদের দেয়ালের পোড়ামাটি নিজের গায়ে মাখা ও সেগুলো খাওয়ার গল্পটি শোনা যায় অনেক দর্শনার্থীর মুখে। আর তাদের এসব কার্যকলাপে মসজিদটির সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। বিভিন্ন গণমাধ্যমে এই সব সংবাদ প্রকাশিত হবার পরও সংশ্লিষ্ট বিভাগ কোন ধরনের সংস্কারের উদ্যেগ গ্রহন করেনি।
চুন সুরকির দ্বারা নির্মিত ৪ কোণে ৪টি অষ্টকোণাকৃতির মিনার বিশিষ্ট এই মসজিদটি সুলতানি ও মোগল স্থাপত্য রীতির সুস্পষ্ট নিদর্শন। মসজিদটি আকারে বেশ ছোট, তবে এর মনোমুগ্ধকর কারুকার্য হার মানায় তার আয়তনকে। ৫টি প্রবেশদ্বার সম্বলিত মসজিদটির সামনের অংশে পোড়ামাটির বিভিন্ন নকশা আঁকা ৩টি দেওয়াল রয়েছে।
মসজিদটির কার্নিশে শিল্পকর্মের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে তৎকালীণ বাংলার বেশকিছু রূপ। এছাড়া পোড়ামাটির তৈরি অসংখ্য ফুলের নকশা থাকার কারণে আতিয়া মসজিদটি বেশ দৃষ্টিনন্দন। ষোড়শ শতাব্দিতে নির্মিত এই মসজিদটি বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের পুরাতত্ত¡ বিভাগের তত্তাবধানে রয়েছে। ১৯৯৬-১৯৯৭ সালে বাংলাদেশ সরকার মুদ্রিত ১০ টাকার নোটে স্থান পায় ঐতিহাসিক এই মসজিদের ছবি।
এই ঐতিহাসিক মসজিদটি সংস্কার প্রসঙ্গে দেলদুয়ার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হক মারুফ বলেন, একসময় বাংলাদেশের ১০ টাকার নোটে এই মসজিদটির ছবি ছিল। মসজিদটি ঐতিহাসিক। প্রচুর পর্যটক আসে এই ঐতিহাসিক মসজিদটি দেখতে। মসজিদটি সংস্কার করা হলে আরো অনেক পর্যটককে আকর্ষণ করবে। যত দ্রুত সম্ভব সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে সংস্কারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আশা করি, মসজিদটি ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিবেচনা করে কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এসময় তিনি টাঙ্গাইলবাসীর পক্ষে দাবি উত্থাপন করে বলেন, সরকারের কাছে আমাদের জোর দাবি আতিয়া মসজিদের ছবিসহ ১০ টাকার নোটটি পূণরায় চালু করা হোক।
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.