বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের হাজার হাজার মানুষ গৃহবন্দি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ এর আঘাতে। আর এতে এপার-ওপার বাংলার বিভিন্ন জায়গায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে। ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ যে ভয়াল রূপ নিয়ে এগিয়ে আসছিল সে অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড়টি থাবা বিস্তার করতে পারেনি। সুন্দরবনের কারণে ঘূর্ণিঝড়টির গতি কমে অনেকটা দুর্বল হয়ে পড়েছে। বলতে গেলে বুলবুল এখন অতীত।
এদিকে, বুলবুলের পর এবার উত্তর ভারত মহাসাগরীয় এলাকায় (আরব সাগর ও বঙ্গোপসাগর) যে ঘূর্ণিঝড়টি জন্ম নেবে, তার নাম হবে পবন। এরপর আম্ফান। কিন্তু তারপর তৃতীয় ঘূর্ণিঝড়ের নাম কী হবে? তা এখনও ঠিক হয়নি।
এ বিষয়ে কয়েকটি ভারতীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, দ্রুত নতুন নামের তালিকা তৈরি করতে চায় উত্তর ভারত মহাসাগর অঞ্চলের আটটি দেশ ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, ওমান এবং মালদ্বীপ। ইতিমধ্যে বাংলাদেশসহ আটটি দেশ, নিজদের মতো করে বেশ কিছু নাম ঠিক করে ফেলেছে। তার মধ্যে থেকেই বেছে নেওয়া হবে নতুন নাম।
আর শীতের শুরুতে যেভাবে ‘কিয়ার’, ‘মহা’ এবং ‘বুলবুল’-এর আবির্ভাব ঘটল, তা আরো চিন্তায় ফেলেছে আবহাওয়া বিজ্ঞানীদের। সমুদ্রের উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে ঘন ঘন ঘূর্ণিঝড় তৈরি হচ্ছে আরব সাগর এবং বঙ্গোপসাগরে। তা নিয়ে চিন্তিত বিজ্ঞানীরা।
তেমনই এরপর যে ঘূর্ণিঝড়গুলি সাগরে ‘জন্ম’ নেবে, তাদের কী নাম রাখা হবে, তা নিয়েও সমান গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা চলছে। ভারতের কেন্দ্রীয় ঘূর্ণিঝড় বিভাগের প্রধান মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র বলেন, নতুন বছরের জানুয়ারির মধ্যে নতুন তালিকা তৈরি হয়ে যাবে। সব দেশের সঙ্গেই আলোচনা চলছে।
যেভাবে হয় নামকরণ: কখন, কোথায়, কোন ঝড় হয় তা নিয়ে বিভ্রান্তি এড়ানোর জন্য এদের নামকরণ করা হয়। ১৯৪৫ সাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে ঝড়ের নামকরণ শুরু হয়। পূর্বনির্ধারিত একটি নামের তালিকা থেকে একেকটি ঝড়ের নাম দেওয়া হয়। কোনো ঝড়ের গতিবেগ যদি ঘণ্টায় ৬৫ কিলোমিটার অর্জন করে, তাহলে তাকে একটি নাম দেওয়া হয়।
১৯৯৯ সালে ওডিশায় ঘূর্ণিঝড়ের পর ২০০০ সালে ওয়ার্ল্ড মেটিওরলজিক্যাল অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএমও) ও এসক্যাপ তাদের বৈঠকে উত্তর ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ শুরুর বিষয়ে একমত হয়। ২০০৪ সালে প্রথম ‘অনিল’ ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করা হয়।